19 May 2024, 11:04 pm

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রুত শুরু করতে পারব : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি কোনো সময় ভালো ছিল না। কখনো একটু ভালো হয়, আবার কখনো একটু খারাপ হয়। এ পরিস্থিতি সবসময় বিরাজমান। আমরা আশা করি, এ পরিস্থিতি সবসময় থাকবে না। আমরা অতি দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে পারব।

রোববার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে সকালে চীন ও নেপালের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের প্রেসিডেন্টের কো-অর্ডিনেটর দেখা করতে আসেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা বাংলাদেশের জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত সরকার। আমাদের পররাষ্ট্র নীতি হচ্ছে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’। আমাদের সঙ্গে চীন, ভারত, রাশিয়ার যেমন অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক, আমাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউকের সঙ্গেও চমৎকার সম্পর্ক। আজ সকালে চীনের রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশে জাতিসংঘের প্রেসিডেন্টের কো-অর্ডিনেটর এবং নেপালের রাষ্ট্রদূত আমার সঙ্গে দেখা করেছেন।

আম আমদানি করতে চায় চীন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন আমাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী। বিশেষ করে আমাদের দেশের বড় বড় ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও সেতু নির্মাণে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নির্বাচনের পরপরই চীনের প্রেসিডেন্ট অভিনন্দন জানিয়েছে। চীনের সঙ্গে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সহযোগিতা রয়েছে। এই বাণিজ্য এখনও চীনের ফেভারে। চীন থেকে আমরা তিসি আমদানি করি এবং গম রপ্তানি করি। এ বিষয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলাপ করেছি। তারা বাংলাদেশ থেকে পাট, চামড়া, মাংস, সিফুড ও মাছ আরও বেশি আমদানি করতে চায়। এর বাইরে তারা বাংলাদেশ থেকে আম আমদানি করতে চায়।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ বছরের সেকেন্ড হাফ অর্থাৎ জুলাই মাসের পর থেকে তারা আমদানি করতে পারে। আমরা যেহেতু গম রপ্তানি করি এবং চীন আমাদের বড় একটা মার্কেট, এজন্য শুল্কমুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনার মধ্যে আছি। আমরা যাতে চীনের শুল্কমুক্ত পণ্য প্রবেশের সুবিধা পাই।

হাছান মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আমাদের দেশের জন্য একটি বোঝা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী মানবিক কারণে ২০১৭ সালে সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন। সেই সময় ওই এলাকার মানুষ তাদের হৃদয়ও খুলে দিয়েছিল। কিন্তু মিয়ানমারের শরণার্থীরা কক্সবাজারে যে এলাকায় আছে, সে এলাকার বাসিন্দারা এখন মাইনরিটি হয়ে গেছে। মিয়ানমারে সব রাইটসহ তাদের প্রত্যাবর্তন একমাত্র সমস্যার সমাধান। এটা নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়েছে। আমরা চীনের সহযোগিতা কামনা করেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে, তারা মিয়ানমারের সঙ্গে এনগেজমেন্টের মধ্যে আছে। তারা মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তারা মিয়ানমারকে বলছে, অন্তত বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাবর্তনটা শুরু করার জন্য।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, মিয়ানমার হয়ত খুব দ্রুত প্রত্যাবর্তন শুরু করবে।

রোহিঙ্গা ইস্যু যেন ইন্টারন্যাশনাল স্পটলাইট থেকে হারিয়ে না যায়

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউএন প্রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। সেখানে তার সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যু যেন ইন্টারন্যাশনাল স্পটলাইট থেকে হারিয়ে না যায়, কারণ ২০১৭-২০ সাল পর্যন্ত রোহিঙ্গা ইস্যু যেভাবে ইন্টারন্যাশনাল স্পটলাইটে ছিল পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলো, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হলো, তখন রোহিঙ্গা ইস্যু ইন্টারন্যাশনাল স্পটলাইট থেকে কিছুটা হলেও দূরে সরে গেছে। এটি যেন না হয়, সেজন্য তার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এর বাইরে যেভাবে ইউএন সেক্রেটারি জেনারেল আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ব্যক্ত করেছেন, আমার কাছে করেছেন, বিশ্বমণ্ডলে বিভিন্ন জায়গায় করে চলেছেন, সেগুলো সঙ্গে ইউএন হিউম্যান রাইটস অফিসের মাঝে মধ্যে যে বিবৃতিগুলো এসবের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে, সেই বিষয়েও আমি আলোচনা করেছি। কারণ তারা বায়াসড ও রং সোর্স থেকে ইনফরমেশন পায়। তিনি বলেছেন, এ বিষয়টি তিনি দেখবেন।

নেপাল থেকে আরও বেশি জলবিদ্যুৎ আমদানি

হাছান মাহমুদ বলেছেন, নেপাল আমাদের ইমিডিয়েট প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে আমাদের উত্তরে দূরত্ব হচ্ছে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার। আমাদের দুই দেশের মধ্যে আরও অর্থনৈতিক সম্পর্ক যেন বিস্তৃত হয়, পিপল টু পিপল কন্ট্রাক্ট যেন আরও বিস্তৃত হয়, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি সেটি হচ্ছে ক্লাইমেট চেঞ্জ এবং এনভারনমেন্ট ইস্যু। ইতোমধ্যে নেপালের সঙ্গে ৪০ মেগাওয়াট ইলেক্ট্রিসিটি আমদানির চুক্তি করেছি। ট্যারিফ নিয়ে আমাদের মধ্যে নেগোশিয়েশন হচ্ছে। আমরা যেন সেখান থেকে আরও বেশি জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে পারি, আমাদের ইনভেস্টররা যেন সেখানে ইনভেস্ট করতে পারে– এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তিনি আমার কাছে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে অভিনন্দন জানিয়েছেন, সেটি হস্তান্তর করেছেন। একই সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, সেটিও আমার কাছে হস্তান্তর করেছেন চীনের রাষ্ট্রদূত।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 4533
  • Total Visits: 750692
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1127

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ ইং
  • ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ১১ই জ্বিলকদ, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ১১:০৪

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
20212223242526
2728293031  
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018